শুক্রবার, ৬ মে, ২০১১

প্রকাশনায় আদিবাসী জীবন সংস্কৃতি বিষয়ক গোলটেবিল বৈঠক

পাঠ্যপুস্তকসহ বিভিন্ন প্রকাশনায় ইতিবাচক তথ্য উপস্থাপনের আহবান
পাঠ্যপুস্তকের ত্রুটিগুলো সংশোধনে সরকার শীঘ্রই উদ্যোগ নেবে- ডা: মো: আফছারুল আমীন এমপি

সরকার আদিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আন্তরিক- দীপংকর তালুকদার এমপি


ঢাকা, ২৭ এপ্রিল ২০১১।
রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউণ্জে অনুষ্ঠিত ‘প্রকাশনায় আদিবাসী জীবন সংস্কৃতি : আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে পাঠ্যপুস্তকসহ বিভিন্ন প্রকাশনায় আদিবাসীদের জীবন সংস্কৃতির বিষয়ে সঠিক তথ্য উপস্থাপন করার জন্য বক্তারা আহবান জানান। ডেভেলপমেন্ট ইনিসিয়েটিভ ফর ইনক্লুসিভ পিপল (দীপ), শিসউক ও জাবারাং কল্যাণ সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত বৈঠকে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ডা: মো: আফছারুল আমীন এমপি, বিশেষ অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার এমপি, আইএলও‘র ডেপুটি কান্ট্রি ডারেক্টর গগণ রাজভান্ডারি প্রমুখ।

গোল টেবিল বৈঠকে প্রাথমিক স্তুরের জাতীয় পাঠ্যপুস্তকসহ বিভিন্ন প্রকাশনায় দেশের আদিবাসীদের সম্পর্কে বিভিন্ন অসংগতিপূর্ণ তথ্য ও ছবি সংশোধনের প্রাসংগিকতা নিয়ে গবেষণাকর্মের তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরেন দীপ-এর নির্বাহী পরিচালক চৌধুরী আতাউর রহমান রানা।

জাবারাং কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিচালক মথুরা বিকাশ ত্রিপুরার স্বাগত বক্তৃতায় সূচিত এই গোলটেবিল বৈঠকের সঞ্চালক ছিলেন দৈনিক ভোরের কাগজ-এর সম্পাদক শ্যামল দত্ত এবং সভাপতিত্ব করেন দীপ-এর সভাপতি দেবী প্রসাদ মজুমদার।

বৈঠকে নির্ধারিত আলোচক হিসেবে বিশ্লেষণমূলক বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড। শেখ আব্দুস সালাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য গৌতম কুমার চাকমা, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক শক্তিপদ ত্রিপুরা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক জোবাইদা নাসরিন, ককবরক রিসার্চ ইনস্টিটিউট-এর সভাপতি প্রশান্ত কুমার ত্রিপুরা, বাংলাদেশ মণিপুরি সাহিত্য সংসদ-এর সভাপতি এ কে শেরাম, আউস-এর নির্বাহী পরিচালক ভগবত টুডু, খাসি সোশ্যাল কাউন্সিল-এর সভাপতি জিডিসন প্রধান সুছিয়াং প্রমুখ। অনুষ্ঠান ঘোষণা করেন দীপ-এর সংগঠক আমিনুল ইসলাম বাবু। নির্ধারিত আলোচকদের আলোচনা শেষে মুক্ত আলোচনাপর্বে অংশগ্রহণ করেন অভিলাষ ত্রিপুরা, এডভোকেট প্রমিলা টুডু, অমর চাকমা প্রমুখ।

বৈঠকের বক্তারা দেশের পাঠ্যবইয়ে আদিবাসী জনগোষ্ঠী সম্পর্কে নেতিবাচক যেসব বিষয় সন্নিবেশ করা রয়েছে, তা সংশোধন করার জন্য এবং দেশের আদিবাসীদেরকে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী বা অন্যকোন নামে নয় বরং ‘আদিবাসী’ হিসেবেই সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আবেদন জানান। বক্তারা জাতীয় পাঠ্যপুস্তক রচনা ও সম্পাদনায় সম্পৃক্ত প্রবন্ধকার, গবেষক ও লেখকবৃন্দ ছাড়াও যাঁরা আদিবাসী জীবন-জীবিকা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে লেখালেখি করেন, তাঁদের সকলকে আরও সংবেদনশীল হওয়ার জন্য অনুরোধ জানান। জাতীয় ঐক্য ও দেশের সকল জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে সম্প্রীতি বজায় রাখার স্বার্থে কোন জনগোষ্ঠী সম্পর্কে কোনরূপ নেতিবাচক তথ্য পাঠ্যপুস্তকসহ বিভিন্ন প্রকাশনায় উপস্থাপন না করার জন্য আহবান জানানো হয়। বক্তারা জাতীয় পাঠ্যবই রচনা প্রক্রিয়ায় আদিবাসী বিশেষজ্ঞদেরকে সম্পৃক্ত করার জন্য মন্ত্রণালয় ও জাতীয় পাঠ্যসূচি ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডকে আহবান জানান।

গোলটেবিল বৈঠকে দেশের প্রতিষ্ঠিত লেখক, গবেষক, সংবাদকর্মীসহ আদিবাসী বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সামাজিক ব্যক্তিত্ব, বিশিষ্ট নাগরিক এবং লেখক-গবেষক অংশ নেন। বৈঠক আয়োজনে সহযোগিতা করেছে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন